যশোর জেলা আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ শাহীন চাকলাদারসহ শীর্ষনেতাদের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। আজ রোববার দুপুরে এ অভিযান চালানো হয়। তবে অভিযানে কাউকে আটক বা কিছু উদ্ধার হয়নি। 

পুলিশের দাবি, দলীয় পরিচয়ে কারো বাড়িতে অভিযান চালায়নি পুলিশ। বিভিন্ন মামলার আসামিদের আটক, মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারের অংশ হিসাবে এ অভিযান চালানো হয়। 

এদিকে দিনদুপুরে পুলিশি বহর নিয়ে নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি অবস্থান ও অভিযানে স্থানীয় প্রতিবেশীদের মাঝে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। উৎসুক জনতাও অভিযানের সময়ে নেতাকর্মীদের বাড়ির সামনে ভিড় করতে দেখা গেছে। যদিও এসব নেতারা ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ডিবি পুলিশের দুটি ও থানা পুলিশের পাঁচটি গাড়িতে পুলিশ প্রথমে যান শহরের কাঁঠাতলাস্থ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের বাড়িতে। যদিও এই বাড়িটি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের দিন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এর পর থেকে শাহীন চাকলাদার ও তার পরিবারের সদস্যরা ওই বাড়িতে আর থাকেন না। পোড়া এই বাড়িতে সংস্কারের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশ কথা বলে চলে যান। এর পর পুলিশের টিমটি যশোর পৌরসভার ৪ নাম্বার ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলনের বাসায় যায়। সেখান থেকে শহরের কদমতলায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েলের বাসাতে যায়। পরে পুলিশ সদস্যরা জুয়েলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে চলে যান। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টিমটি কাজীপাড়াতে জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাইফুজ্জামান পিকুল ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলের বাড়িতে যায়। এসব বাড়ি থেকে কাউকে আটক বা কিছু উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েলের ভাবি জ্যোৎস্না বেগম বলেন, ‘আমাদের বাসায় পুলিশ এসেছিল। জুয়েলের খোঁজখবর নেয়। তবে কাউকে হেনস্তা করেনি।’

অভিযানে থাকা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ‘নেতাকর্মীদের বাড়িতে বিভিন্ন মামলার আসামিরা অবস্থান করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালায়। তবে কাউকে পাওয়া যায়নি। এই ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবুল হাসনাত বলেন, ‘দলীয় পরিচয়ে কারও বাড়িতে অভিযান চালানো হয়নি। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা কিছু উদ্ধার করা যায়নি ‘

এ দিকে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল করছে। শনিবার ঝটিকা মিছিল বন্ধ করতে না পারলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা; তারই অংশ হিসাবে নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পুলিশ এ অভিযান চালাচ্ছে।